© শ্রী শান্তনু সিংহ, সভাপতি, হিন্দু সংহতি
মাঝখানে বসে থাকা ভদ্রলোকের নাম শানোজ মিশ্র । তাঁরই নির্দেশনায় তৈরি হয়েছে THE DIARY OF WEST BENGAL । সিনেমাটি দেখলাম ল্যাপটপে l এমন কিছু সাবজেক্ট আছে যেটা দেখলে ভয়ংকর শব্দটা হয়তো ভুলে যেতে হবে। অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে সেন্সরের বাঁধা কাটিয়ে ফিল্মটি মুক্তি পেতে চলেছে আগামী মাসে।
আজ [13-07-2024) ভদ্রলোক আমাদের বাড়িতে এসেছেন । সারাদিন কাটালেন এখানে । দুপুরে এখানেই খাওয়া দাওয়া হল । ভেজ । রান্না করলো অমিত । কলকাতায় প্রিমিয়ার শো নিয়ে কিছু কথাবার্তা বলতে। আর শানোজ মিশ্রের নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে। চমকে যাওয়ার মতো অভিজ্ঞতা । বললেন, "আমি প্রথমেই ঠিক করে নিয়েছিলাম, বই পড়ে আর google দেখে ঠান্ডা করে বসে সিনেমার স্ক্রিপ্ট লিখবো না ।" তাই নিজে চলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ । দীর্ঘদিন থেকেছেন রোহিঙ্গাদের সাথে। বিহারী মুসলমান ছদ্মবেশে, ছদ্মনামে । জানিয়েছেন, কিভাবে সুন্দরবনের নদী বন পার করিয়ে রোহিঙ্গাদের আস্তে আস্তে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকানো হয় । আর তারপর ছড়িয়ে দেওয়া হয় সারা ভারতবর্ষে । আগে থেকে ঠিক করে থাকে, কোন রোহিঙ্গা গ্রুপকে কোথাকার আধার কার্ড, কোথাকার প্যান কার্ড দেওয়া হবে। নিজেই দেখালেন একই নামে পাঁচটা বিভিন্ন নং এর আধার কার্ড , প্যান কার্ড, বিভিন্ন ঠিকানায়। বললেন, ওদের দিয়েই করিয়েছি, আসল সত্যটাকে জানবার জন্য।
নিজেই বাংলাদেশের মুসলিম কট্টরবাদীদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন, দেখেছেন কিভাবে হিন্দুদের বাড়িতে বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের ধর্ষণের ভয় দেখিয়ে বাংলাদেশ ছাড়া করছে মুসলমানরা । সেই অভিজ্ঞতা ঝুলিও খুলে দিয়েছেন এই সিনেমায় ।
ছবি: হিন্দু সংহতির কার্য্যালয়ে শ্রী সানোজ মিশ্র |
বললেন এই চক্রান্তের জাল আন্তর্জাতিক । প্রায় সমস্ত আরব দেশগুলো জড়িত । সাথে সমর্থন পাচ্ছে আমেরিকা ও চীনের থেকে । ভারতবর্ষের বিভিন্ন মুসলমান সংগঠনের বা মুসলমান নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে এই রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করানো হচ্ছে, সাথে প্রচুর পরিমাণে বাংলাভাষী মুসলমান, সবই বাংলাদেশ থেকে। রাজনৈতিক দলগুলো ভোটের স্বার্থে এদের আধার কার্ড প্যান কার্ডের সাথে সাথে ভোটের আই কার্ড করে দিচ্ছে। কিন্তু বুঝতে চাইছে না মুসলমানরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছে, পশ্চিমবঙ্গকে আরেকটা বাংলাদেশ তৈরি করবার জন্য। অথবা আরেকটা পাকিস্তান ।
দুঃখ করলেন যে বাংলার জন্য দেশ স্বাধীন হলো এবং যে হিন্দু বাঙালিতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ তৈরি হলো, সেই পশ্চিমবঙ্গই আস্তে আস্তে মুসলমান পশ্চিম বাংলাদেশ হতে চলেছে।
প্রশ্ন করেছিলাম, তা আপনার এই এত বড় কাজে আমার মতো একজন সাধারন কর্মীর কি ভূমিকা । বললেন, "সাধারন না অসাধারণ জানি না, আপনার কথা প্রথম জেনেছিলাম সায়ন চক্রবর্তীর কাছ থেকে । তারপর আমার নিজের প্রয়োজনেই আপনার এবং আপনাদের সংগঠন সম্পর্কে খোঁজ নিতে থাকি, দিল্লিতে গিয়ে আরো বিশদভাবে আপনাদের কথা জানতে পারি। তাই মনে হল, আপনার সাথে কথা না বললে আমার অনেক জানাই হয়তো অপূর্ণ থেকে যাবে। "
লজ্জায় জিভ কেটে বললাম - বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, "ঝড়ে বক মরে, ফকিরের কেরামতি" । আমি খুব, খুবই সাধারণ এবং সমাজে আমার ভূমিকাও খুবই নগণ্য। আপনি আমার সম্বন্ধে যা শুনেছেন বা যা ভাবছেন, আমি সেটার এতটা উপযুক্ত নই।
জাস্ট যাবার সময় একটা কমপ্লিমেন্ট দিলেন- আমি এখানে ঢোকার পর এবং বেরিয়ে যাচ্ছি এখন, একবারও মনে হয়নি, আমি আপনার বাড়িতে এসেছি । মনে হচ্ছে যেন আমি আমার বাড়িতে এসেছি।
বললাম, সত্যি কথা বলতে, এটা সমস্ত হিন্দু যোদ্ধার বাড়ি । তাই আমি খুব প্রয়োজন ছাড়া, সবসময় "আমাদের" শব্দটা ব্যবহার করি, কখনো "আমার" নয়।