অনুষ্ঠানের শুরুতে আগত অতিথিরা কলকাতার রক্ষাকর্তা শ্রী গোপাল মুখার্জি(Gopal Mukherjee), হিন্দু সংহতির প্রতিষ্ঠাতা শ্রী তপন কুমার ঘোষ, ভারত মাতা এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রণবানন্দের ছবিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। তারপর শুরু হয় মূল কার্যক্রম। একে একে বক্তব্য রাখেন হিন্দু সংহতির নেতৃত্ব এবং আগত অতিথিরা।
|
ছবি: বক্তব্য রাখছেন স্বামী প্রদীপ্তানন্দজী মহারাজ |
বাংলাদেশ থেকে আগত শ্রী গোবিন্দ প্রামাণিক তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপরে ইসলামিক মৌলবাদীরা যে ক্রমাগত নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে এবং নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হিন্দুরা যে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, তা তুলে ধরেন। তিনি তাঁর বক্তব্যের বলেন, "আমরা দূর্গা পূজা করি। পূজায় আমরা দেখি যে দেবীর দশ হাতে অস্ত্র এবং অসুরকে বধ করছে। কিন্তু সেসব দেখে আমরা শিক্ষা নিই না। আমরা বর্তমান যুগে অসুরদের বধ করার বদলে তাদের ডেকে এনে ফুলের মালা দিয়ে সম্মান জানাই। আর এই কারণে আমরা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।" তিনি একইভাবে মা কালীর কথা তুলে ধরেন এবং অসুরদের বধ করার কথা বলেন। "হিন্দুদের মা বোনেদের সম্মান রক্ষায়, মঠ-মন্দির রক্ষায় অসুরদের বলি দেওয়ার সময় এসেছে।"
হিন্দু সংহতির সভাপতি শ্রী শান্তনু সিংহ তাঁর বক্তব্যে বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের অবস্থা তুলে ধরেন। আজ পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের অবস্থা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের মতোই, সেকথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, "হিন্দু যদি সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে চায়, বাঙ্গালী হিন্দু যদি তাঁর ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুরক্ষিত দেখতে চায়, তবে লড়াই একমাত্র পথ।"
|
ছবি: বক্তব্য রাখছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শ্রী শুভেন্দু অধিকারী |
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শ্রী শুভেন্দু অধিকারী তাঁর বক্তব্যে রাজ্যের সনাতনী হিন্দুদের স্বার্থে তাঁর লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেন। এছাড়াও, তাঁর বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মুসলিম অনুপ্রবেশ এবং তারপর তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পশ্চিমবঙ্গের মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে চলা সরকারের সীমাহীন মুসলিম তোষণকে নিশানা করেন। সদ্য ঘটে যাওয়া বাঁশবেড়িয়াতে হিন্দুদের উপরে জিহাদি আক্রমণের কথা তুলে ধরেন তিনি।
এছাড়াও, অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসী স্বামী প্রদীপ্তানন্দজী মহারাজ, হিন্দু সংহতির সহসভাপতি শ্রী ব্রজেন্দ্রনাথ রায়, স্বামী বলভদ্র মহারাজ প্রমুখ।
|
ছবি: বক্তব্য রাখছেন শ্রী শান্তনু সিংহ |
উল্লেখ্য, ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম লীগের ডাকা "প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস(Direct Action Day)" দিবসে কলকাতার বুকে হিন্দু গণহত্যা হয়। দুই দিন ধরে চলা সেই গণহত্যায় হিন্দুর রক্তে ভেসে যায় কলকাতা শহর। কিন্তু তারপর গোপাল মুখার্জির নেতৃত্বে রুখে দাঁড়ান কলকাতার হিন্দুরা। প্রতিরোধ ও প্রতিশোধ নেয় বীর বাঙ্গালী হিন্দু যোদ্ধারা। কিন্তু বামপন্থী ঐতিহাসিকদের ন্যারেটিভের খেলায় ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই হয়নি বীর গোপাল মুখার্জির। সেই বীরকে চিনিয়ে দিতে হিন্দু সংহতির প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রাক্তন সভাপতি শ্রী তপন কুমার ঘোষ ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে গোপাল মুখার্জির স্মরণে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সেই থেকে প্রতি বছর কলকাতার বুকে ১৬ই আগস্ট দিনটি পালন করে আসছে হিন্দু সংহতি।